রউফুল আলম, স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) :
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা কে নানার পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় চাকুরী নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে, খামার গাড়াগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সূর্যি আক্তার বিরুদ্ধে ।
তিনি উপজেলার কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ছিট রাজিব দুন্দী পাড়া গ্রামের জাহেদুল ইসলামের মেয়ে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাগজপত্রাদির আলোকে জানা গেছে, শিক্ষিকা সূর্যি আক্তার একই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা তমিজ উদ্দিনের ওয়ারিশন সনদ পত্র জালিয়াতি করে ২০১৬ সালের ১৯ শে জানুয়ারী মুক্তিযোদ্ধার কোটায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ওই শিক্ষিকার মাতৃ- পিতৃ উভয় পরিবার বর্গ মুক্তিযোদ্ধার সাথে আদৌ সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। প্রতারণার আশ্রয়ে সু কৌশলে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া নাতনীর পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে সরকারী যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে আসতেছেন। শিক্ষিকার মায়ের জাতীয় পরিচয় পত্রে নাম উল্লেখ রয়েছে মহছেনা বেগম, পিতার নাম মোঃ মোফাজ্জল হোসেন। পরবর্তীতে শিক্ষিকার মায়ের নাম করণ করা হয়, মোছাঃ মর্জিনা বেগম মহছেনা। সরেজমিনে ও শিক্ষিকার মা, মহছেনা বেগমের জাতীয় পরিচয় পত্র সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষিকা সূর্যি আক্তারের প্রকৃত নানা একই গ্রামের মোঃ মোফাজ্জল হোসেন (মাষ্টার)। অথচ তার প্রকৃত নানার নাম গোপন করে জাল- জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় চাকুরী নেন।
সেই সময়ে কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান (বাবুল) স্বাক্ষরিত বীর মুক্তিযোদ্ধা তমিজ উদ্দিনের ওয়ারিশন সনদপত্রে ১ম কন্যা হিসেবে শিক্ষিকা সূর্যি আক্তারের মা, মোছাঃ মর্জিনা বেগম মহছেনা নাম সংযুক্ত করেন। যেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা তমিজ উদ্দিনের স্ত্রী হাছনা বেগমের জন্ম তারিখ ০২-০৫-১৯৬৮ এবং কন্যা মোছাঃ মর্জিনা বেগম মহছেনার জন্ম তারিখ ০১-০৯-১৯৭২ মা-মেয়ে বয়সের ব্যবধান ৪ বছর দেখানো হয়েছে। বর্তমান ওয়ারিশন সনদপত্র ও জাতীয় পরিচয় পত্রে দেখা যায়, মহছেনা বেগমের পিতা হিসেবে মোঃ মোফাজ্জল হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা তমিজ উদ্দিনের ওয়ারিশন সনদপত্রে তিন মেয়ে ও তিন ছেলের নাম উল্লেখ্য থাকলেও মোছাঃ মর্জিনা বেগম মহছেনা নামে তার কোন কন্যা সন্তানের নাম উল্লেখ করা হয়নি । এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় , বীর মুক্তিযোদ্ধা তমিজ উদ্দিনের তিন ছেলে তিন মেয়ে রয়েছে। মহছেনা কিংবা মর্জিনা নামে তার কোন মেয়ে বা সূর্যি আক্তার নামে তার কোন নাতনি নেই।
শিক্ষিকা সূর্যি আক্তারে সাথে এ বিষয়ে বার বার মুঠো ফোনে যোগাযোগসহ একাধিকবার বাড়িতে গেলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা তমিজ উদ্দিন জানান, মর্জিনা কিংবা মহছেনা নামে আমার কোন মেয়ে নেই বা সূর্যি আক্তার নামে কোন নাতনি নেই । এ সম্পর্কে আমি কোন জানি না। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শরিফা আক্তার জানান, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অধীনস্থ্য নয়, তাই এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারছি না। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন বলেন , আমি সাত থেকে আট মাস আগে দায়িত্বভার গ্রহন করেছি । বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।